,

প্রেমের টানে বাংলাদেশে, ঘর বাঁধা হলো না সাথীর

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথী সরকার। বিয়ে করে ঘরও বেঁধেছিল। কিন্তু বিধিবাম, সব ছেড়ে ফিরে যেতে হলো নিজ দেশে বাবা-মায়ের কাছে।

গত বছরে ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশের সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে প্রেমের টানে বাংলাদেশে চলে আসেন ভারতের নদীয়া জেলার তাহেরপুর থানার রাধাকান্তপুর গ্রামের সাথী সরকার। ইন্টারনেটে গেম খেলতে গিয়ে ভার্চুয়ালি পরিচয় হয় বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারগাড়া গ্রামের আব্দুল আলীমের ছেলে ওমর আলীর সঙ্গে। এরপর মন দেওয়া-নেওয়া। এক পর্যায়ে দালালের মাধ্যমে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চলে আসেন বাংলাদেশে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ঘর বাঁধে ওমর আলীর সঙ্গে।

এরপর মেয়ের খোঁজ জানতে পারে সাথী সরকারের বাবা পরিতোষ সরকার। তারপর মেয়েকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় তাহেরপুর থানায় মামলা করেন। বিষয়টি আমলে নেয় বাংলাদেশে ভারতীয় দুতাবাস। ৩-৪ মাস সংসার করার পর হঠাৎ একদিন পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায় সাথী সরকারকে। অপরাধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ। তারপর সাথীর জায়গা হয় কুষ্টিয়া জেলার নারী পুর্নবাসন কেন্দ্রে।

রোববার (সেপ্টেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বন্দর চেকপোস্ট সীমান্তে যখন সাথীকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হচ্ছিল, তখন সাথী ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা দেন।

সাথী বলেন, ‘আমার হৃদয়জুড়ে আছে আমার হাজব্যান্ড ওমর। আমার বাবা-মা মামলা করেছে তাই ফেরত যাচ্ছি। যদি আবার আসতে পারি তাহলে অবশ্যই সংসার করব।’

সাথীর বাবা পরিতোষ সরকার বলেন, ‘আমি কৃষক। আমার এক ছেলে এক মেয়ে। সাথী আমার মেয়ে তাহেরপুরের বেশপুর হাইস্কুলে ১১ ক্লাসে পড়ত। কম্পিউটার ক্লাসে এসে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে জানতে পারি বাংলাদেশের একটি ছেলের সঙ্গে প্রেম করে পালিয়ে গেছে। তারপর মামলা করি। ‘

সাথীর মা সিথী সরকার বলেন, “দীর্ঘদিন পর একমাত্র মেয়েকে ফিরে পেয়ে খুব ভাল লাগছে।’

রোববার দুপুর ১২টায় দর্শনা বন্দর সীমান্তের শুন্যরেখায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদশেরে পক্ষে ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনারের ডেপুটি কনস্যুলার দেবব্রত চক্রবর্তী, বিএসএফ’র গেঁদে কোম্পানী কমান্ডার এসি নাগ্রেন্দ্র পাল, ইমিগ্রেশন অফিসার সন্দীপ তেওয়ারি, কাস্টমস অফিসার অজয় নারায়ণ রায়, প্রশান্ত কুমার ঘোষ, কৃষ্ণগঞ্জ থানার ওসি বাপিন মূখার্জি, ডিআইব সাধন মন্ডল প্রমুখ।

বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন, বিজিবির আইসিপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার আব্দুল জলিল, হাবিলদার সিরাজুল ইসলাম, কৃষ্টিয়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) জহির উদ্দিন, দর্শনা ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই নাঈম, এসআই মাহমুদ, দর্শনা থানার এসআই সোহেল রানা, কুষ্টিয়া ডিএসবির আবু তারেক, দর্শনা কাস্টমস কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেন, মোর্শেদ আলম প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর